চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান | মুসলিমদের চিকিৎসা বিপ্লব ~ ইসলাম পরিচয়

 

 চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান

 

এই কথাটা শুনলে আমাদের বেশীর ভাগের মাথায় আসে চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনার কথা কিংবা মধ্যযুগের মুসলিম স্কলারদের লেখা কিছু গ্রন্থ বা আবিষ্কারের গল্প। আমরা সাধারন মুসলিমরা এতটুকু জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু বিশ্বাস করেন চিকিৎসাক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান এত বেশি যে যা আপনাকে অবাক করে দেবে। আপনি চিন্তায় পড়ে যাবেন এই বিষয়গুলো কেন আমরা মুসলিমরা এত কম জানি। আজকের এই লেখায় সে বিষয়গুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব।  

চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান


জার্মান পণ্ডিত Dr. Karl তার Die Medizin Im Koran গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, কুরআনের ১১৪ টি সূরার মধ্যে ৯৭ টি সূরার ৩৫৫টি আয়াত চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট। তিনি এ সকল আয়াত নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন এবং আয়াতগুলোকে তিনভাগে বিভক্ত করেন। যথাঃ  চিকিৎসাশাস্ত্র, স্বাস্থ্য বিদ্যা এবং স্বাস্থ্য বিধান। এই তিনটা ক্যাটেগরির আরো কিছু সাব ক্যাটেগরি রয়েছে। যেমনঃ চিকিৎসা শাস্ত্রের সাব ক্যাটাগরি গুলো হচ্ছেঃ সৃষ্টি ,ভ্রূণ, গর্ভধারণ, গর্ভাবস্থা, শিশু পরিচর্যা, শরীর জ্ঞান, শরীরবৃত্ত, প্যাথলজি, সাধারণ চিকিৎসা, বিশেষ চিকিৎসা, মৃত্যু ইত্যাদি। স্বাস্থ্যবিদ্যার সাব ক্যাটাগরি গুলো হচ্ছেঃ পোশাক, বিশ্রাম, পুষ্টি, পানীয়, ঘরবাড়ি, সংক্রমণ ব্যাধি, আকস্মিক মহাদুর্ঘটনা, মহামারী ইত্যাদি। আর স্বাস্থ্য বিধানের সাব ক্যাটাগরি গুলো হচ্ছেঃ শারীরিক পুষ্টিবিধান তথা মদ মাংস ইত্যাদি বিষয়ক, যৌন বিধান, আনুষ্ঠানিক বিধি-বিধান, অজু-গোসল, বিনোদন, সামাজিক বিধি-বিধান ইত্যাদি।   

অর্থাৎ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা'আলা মানব জাতির জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি ইত্যাদির ওপর গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতিপূর্বে আর কোন গ্রন্থেই চিকিৎসা, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে এত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিজ্ঞান সম্মত নির্দেশনা বা বর্ণনা দেওয়া হয়নি। 

রাসূল সাঃ ও এই চিকিৎসা ব্যবস্থা বা স্বাস্থ্যবিধি অব্যাহত রেখেছেন।  স্বাস্থ্যবিধি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বা হাইজিন এর উপর আমরা রাসূল সাঃ এর অনেক সুন্নত এবং হাদিস দেখতে পাই। যা সবগুলোই পরিপূর্ণভাবে বিজ্ঞানসম্মত। 

ইসলামে রোগী দেখা, রোগীর যত্ন করা, খোঁজ-খবর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখানো হয়েছে। আমাদের রাসুল সাঃ নিজেও এই আমলটা করতেন এবং তার সাহাবীদেরকেও এই আমলটা করার জন্য উৎসাহিত দিতেন। রাসূল সাঃ এর  সিরাত এবং হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি রাসুল সাঃ নিজেও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করতেন এবং রোগীদের কেও চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিতেন। তিনি কোন রোগের কি চিকিৎসা গ্রহণ করতেন, বা কি চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলতেন সেই সম্পর্কিত একটি চমৎকার বই রয়েছে যার নাম তিব্বে নববী। অসাধারণ একটি বই। রোগীর চিকিৎসা করা, রোগীর সেবা যত্ন করা, রোগকে অভিশাপ মনে না করে, তার জন্য যথাপোযুক্ত চিকিৎসা খোঁজা বা চিকিৎসা করানো ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকেই প্রচলিত ছিল। 

বিজ্ঞানময় কোরআন এবং হাদিসের এই প্রেরণাকে সামনে রেখেই মূলত আব্বাসীয় খেলাফতের সময় মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সূচনা হয়। প্রথমে প্রাচীন গ্রন্থের অনুবাদ, তারপর মুসলিম চিন্তা এবং গবেষণার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞান। ৭৫০ থেকে ১১০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই সময়কাল পরিব্যাপ্ত। এই সময় মুসলিম বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকেরা তাদের চিন্তা এবং গবেষণা দিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কে একটি শক্তিশালী গাঁথুনি বা ভিত্তি দিতে সক্ষম হন। গবেষণাকাজ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থায়ন করা হতো এবং সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হতো।

এবার চিকিৎসাবিজ্ঞানে ইসলামিক স্কলারদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান সম্পর্কে জানা যাক। মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন আবু আলী আল হুসাইন ইবনে সিনা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল কানুন ফিততিব’ কে চিকিৎসাশাস্ত্রের বাইবেল বলা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাঁর রচিত ১৬টি মৌলিক গ্রন্থের ১৫টিতে তিনি বিভিন্ন রোগের কারণ ও চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন। মানবসভ্যতায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এর চেয়ে প্রভাবশালী গ্রন্থ এখনো পর্যন্ত আর দ্বিতীয়টি নেই। পাঁচ খণ্ড এবং ৮০০ পরিচ্ছেদে সমাপ্ত এই চিকিৎসা বিশ্বকোষে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে যেন একসঙ্গে বেঁধে ফেলেছেন।

 ইবনে সিনা ছাড়াও চিকিৎসাশাস্ত্রে মৌলিক গবেষণায় অভাবনীয় অবদান রাখেন প্রসিদ্ধ কয়েকজন মুসলিম মনীষী। তাঁদের মধ্যে হাসান ইবনে হাইসাম, আলবেরুনি (৯৭৩-১০৪৮), আলী ইবনে রাব্বান, হুনাইন ইবনে ইসহাক (চক্ষু বিশেষজ্ঞ), আবুল কাসেম জাহরাবি (মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ), জুহান্না বিন মাসওয়াই (চক্ষুশাস্ত্রের ওপর প্রামাণ্য গ্রন্থ প্রণয়ন করেন), সিনান বিন সাবিত, সাবিত ইবনে কুরা, কুস্তা বিন লুকা, জাবির ইবনে হাইয়ান, আলী আত তাবারি, আর-রাজি, ইবনে রুশদ (১১২৬-১১৯৮), আলী ইবনে আব্বাস প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

মুসলিম চিকিৎসাবিদ আর-রাজী (হিজরী ২৫১-৩১৩, ঈসায়ী ৮৬৫ -৯২৫) সর্বপ্রথম চিকিৎসাবিজ্ঞানের নীতিশাস্ত্রের মডেল প্রনয়ণ করেন। তিনি তাঁর লিখিত কিতাব “আহলাক আল তাবীব” এ চিকিৎসাশাস্ত্রে নৈতিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও আলী ইবনে আব্বাস (৩১২-৩৮৪ হিজরী, ৯২৪-৯৯৪ ঈসায়ী) তাঁর “কিতাব আল মালিকি” তে রোগী ও ডাক্তারের সম্পর্ক ও চিকিৎসাব্যবস্থার নীতিগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেন। চিকিৎসাবিদ আর-রাজী শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের নীতিশাস্ত্র প্রণয়ন করেই থেমে থাকেননি। তিনি সর্বপ্রথম বসন্ত এবং হাম এ রোগ দুটিকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেন এবং এই রোগ গুলোর চিকিৎসা বিধান প্রনয়ণ করেন। তিনি তার জীবন কালে ২০০ এর অধিক গ্রন্থ রচনা করেন। যার অর্ধেকই ছিল চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কিত। মানুষের কিডনি ও গলব্লাডারে কেন পাথর হয়, লাশ কাটার বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়, পুনঃপুনঃ স্কন্ধের স্থানচ্যুতির ব্যাখ্যা, এ ছাড়াও অসংখ্য রোগের ব্যাপারে তিনি তার গ্রন্থগুলোতে উল্লেখ করেন। তাঁর লিখিত “কিতাব আল তিব্ব আল মুলুকী” তে খাদ্যনিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারের রোগের প্রতিকারের পদ্ধতি বর্ণনা করেন যা আজও আমাদের চিকিৎসকরা অনুসরণ করে থাকেন।

চক্ষু চিকিৎসা মুসলিমদের মৌলিক আবিষ্কার। আর এর পথিকৃৎ ছিলেন আলী আল মাওসুলি। তিনি ছিলেন এক পৃথিবীর সর্বপ্রথম চক্ষু চিকিৎসক। আমেরিকার রসায়নবিদ জর্জ সার্টনও তাঁকে জগতের সর্বপ্রথম মুসলিম চক্ষু চিকিৎসক বলে অকপটে স্বীকার করেছেন। আলী আল মাওসুলি চোখের ছানি অপারেশনে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তাঁর রচিত ‘তাজকিরাতুল কাহহালিন’ চক্ষু চিকিৎসায় সবচেয়ে দুর্লভ এবং মূল্যবান গ্রন্থ। চোখের ১৩০টি রোগ ও ১৪৩টি ওষুধের বর্ণনা রয়েছে এ বইয়ে। তিনিই প্রথম চোখের রোগের সঙ্গে পেট ও মস্তিষ্কের রোগের সম্পর্কিত হওয়ার বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আরেকজন মুসলিম স্কলার ইবনে নাফিস (হিজরী ৬০৯ – ৬৮৭, ঈসায়ী ১২১৩-১২৮৮) সর্বপ্রথম গ্যালেনের হৃদপিন্ড বিষয়ক ধারণা ভুল প্রমান করেন। তিনি সবিস্তারে রক্ত সংবহন পদ্ধতি বর্ণনা করেন এবং হৃদপিন্ডের গঠন সঠিকভাবে বর্ণনা করেন। তাঁর প্রায় ৩০০ বছর পর ইউরোপে উইলিয়াম হার্ভে নামক এক তথাকথিত বিজ্ঞানী ইবনে নাফিস এর এই আবিস্কার নিজের বলে প্রচার করে। 

হিজরী ৪র্থ শতকে বিজ্ঞানী ইবনুল হাইছাম (৩৫৪ – ৪৩১ হিজরী, ৯৬৫-১০৪০ ঈসায়ী) সবিস্তারে চোখের গঠন ও কার্যপদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ দেখান বস্তু হতে আলো চোখে পড়ে দর্শনের অনুভূতি জন্মে। তিনি চোখের অনুকরণে আলোকচিত্র যন্ত্র পিনহোল ক্যামেরা তৈরী করেন।

আরেকজন মুসলিম স্কলার আলী ইবনে আব্বাস (হিজরী ৩১২-৩৮৪, ঈসায়ী ৯২৪-৯৮৪) উনার “কিতাব আল মালিকি”তে মস্তিষ্ক ও মাথার বিভিন্ন রোগ বা অবস্থার প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেন। যেমন: মাথা ব্যাথা, মাথায় রক্তক্ষরণ, স্ক্যাল ফ্র্যাক্চার, কোমা, সিজোফ্রেনিয়া, ডেমেনটিয়া, ইপিল্যাপসি। এছাড়া তিনি নিউরো এনাটমি, নিউরোবায়োলজি, নিউরোফিজিওলজি নিয়ে আলোচনা করেন, মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র এবং স্পাইন্যাল কর্ডের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। এর সাথে বিভিন্ন রকমের প্যারলাইসিস অবস্থারও চিকিৎসাপত্র দেন। ঘুমকাতরতা, স্মৃতিভ্রষ্টতা ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা করেন।

মুসলিম চিকিৎসক এবং স্কলারদের মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে আল জাহরাবি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ অবদান হচ্ছে অস্ত্রোপচার বা সার্জারি। উনার হাত ধরেই সার্জারি বা অস্ত্রোপচার এর উদ্ভাবন হয়েছে। তিনি আল-তাদরিফ নামের ১,৫০০ পৃষ্ঠার সচিত্র মেডিকেল এনসাইক্লোপিডিয়া প্রকাশ করেছিলেন যা ইউরোপে পরবর্তী ৫০০ বছর ধরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই এনসাইক্লোপিডিয়ায় তিনি দুই শতাধিক, অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন সরঞ্জাম গুলির একটি সচিত্র চমৎকার বিবরণ দিয়েছেন। উনার রচিত এই এনসাইক্লোপিডিয়া বা গ্রন্থটিই ছিল মূলত অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর রচিত প্রথম চিত্রসহ বর্ণনা এবং গ্রন্থ। তিনি তার চিকিৎসাকালে দুই শতাধিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে কিছু দাঁতের চিকিৎসার জন্য, কিছু ছিল ঔষধ ব্যবহারের জন্য এবং কিছু ছিল শল্য চিকিৎসার জন্য। এ সকল যন্ত্রপাতির অনেকগুলো তিনি নিজেই নকশা করে তৈরি করেন। উনার আরেকটি চমৎকার উদ্ভাবন হচ্ছে, তিনি এক ধরনের সার্জিক্যাল থ্রেড বা সুতা উদ্ভাবন করেন যা অস্ত্রোপচারের পর নিজ থেকেই শরীরের সাথে মিশে যায় বা দ্রবীভূত হয়ে যায়। এছাড়া দন্ত চিকিৎসায় তিনি দাতেঁর জায়গায় নকল দাঁত, দাঁত বাধাঁয়ের জন্য সোনা বা রূপার ব্যবহার করতেন। তিনি সর্বপ্রথম রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য তুলার ব্যবহার করেন। তিনি হাড়ভাঙ্গার চিকিৎসায় নিয়মিত প্লাস্টার ব্যবহার করতেন। মুত্রথলীতে পাথর অপসারণ, নাকের পলিপ ও মৃত সন্তানকে রেহেম হতে বের করার জন্য স্ব-উদ্ভাবিত বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করতেন। আল জাহরায়ীর পর ইবনে যুহর সহ আরও কিছু মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানী আরও কিছু যন্ত্রপাতির সমাবেশ ঘটান।

এবার আসা যাক হাসপাতালের কথায়। হাসপাতালে হচ্ছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি কোর প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে আমরা পৃথিবীর বুকে যেই ব্যবস্থা সমৃদ্ধ হাসপাতালগুলো দেখে থাকে এমন ব্যবস্থা সমৃদ্ধ পৃথিবীর প্রথম হাসপাতাল হচ্ছে মুসলিমদের দ্বারা স্থাপিত আহমদ ইবনে তুলুন হাসপাতাল। এই হাসপাতালের মাধ্যমেই মুসলিমরা পৃথিবীকে দেখেছে যে, আধুনিক হাসপাতাল কেমন হবে, এর ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন হবে। এখানে রোগীদেরকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হতো। ইসলামিক আদর্শ অনুসারে রোগীদেরকে সেবা দেওয়াই ছিল এর প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য। ধনী-গরিব সবাই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারত। কোন বৈষম্যে করা হতো না। মুসলিমদের তৈরি এই প্রথম হাসপাতালটিই পরবর্তী হাসপাতালগুলোর জন্য টেমপ্লেট বা আদর্শ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। 

নিঃসন্দেহে মুসলিম স্কলার এবং চিকিৎসকদের এই চমৎকার উদ্ভাবন, আবিষ্কার গুলোর  উপর ভিত্তি করেই আমাদের আজকের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়েছে। আর এর বিনিময়ে পশ্চিমারা তাদের নামে ছড়িয়েছে নানা অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তি, আবিষ্কার গুলোকে স্বীকৃতি দেয়া তো দূরের কথা বরং তারা মুসলিম বিজ্ঞানীদের বহু আবিষ্কার, তত্ত্ব, উদ্ভাবন নিজেদের নামে চালিয়ে দিতে কুন্ঠিত বোধ করেনি।

আপনার যদি মুসলিম স্কলার এবং বিজ্ঞানীদের অসামান্য অবদান সম্পর্কে আরও জানতে চান তাহলে “বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান” নামের এই বইটি পড়তে পারেন। এই বিষয়ের উপর লেখা আরও অনেক বই রয়েছে তবে এই বইটি আমার কাছে পিডিএফ হিসেবে আছে। যদি আপনাদের কারো প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশা-আল্লাহ

লেখক:- Tanveer Sunjil


কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.