বায়তুল হিকমা
প্রতিষ্ঠা:-
বায়তুল হিকমা ৮৩০ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় খলিফা মামুন প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এ বিষয়ে অনেক মতানৈক্য আছে। কেউ কেউ বলেন বাইতুলিক মা খলিফা হারুন রশি দ প্রতিষ্ঠা করেন আরো ভালো করে গবেষণা করলে দেখা যায় বাইতুল হিকমা খলিফা হারুন রশিদের আগে থেকেই বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত ছিল।
নাম:-বায়তুল হিকমার প্রকৃত নাম খিজানাতুল হিকমাত, খিজানাতুল খালিফা।
বায়তুল হিকমার বিভাগ:-
বাইতুল হিকমা মূলত চারটি বিভাগে বিভক্ত ছিল
১) অনুবাদ বিভাগ
২) ব্যাখ্যা বিভাগ
৩) গ্রন্থাগার বিভাগ
৪) মান মন্দির
আব্বাসী খেলাফতের প্রধান চারজন খলিফা যারা বায়তুল হিকমাতের নিজেদের অবদান রেখেছিলেন—
১) মনসুর
২) হারুন রশিদ
৩) মামুন
৪) মুতাওয়াক্বিল
বায়তুল হেকমতের উচ্চ কর্তৃত্বে ছিল খলিফা তারপরে আমির ।
আমিরদের মধ্যে দুজন বিখ্যাত যারা বাইতুল হিকমাতের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ছিলেন তারা হলেন
১)বারা মিকা
২)ফজল বিন সাহাল
বাইতুল হিকমার প্রধানকে সাহেবু বায়তুল হিকমা বলা হতো। খলিফা নিজে এই পদে নিয়োগ দিতেন। সাহেবও বাইতুল হিকমার পরে আমিরুত তরজমার স্থান ছিল । তিনি অনুবাদ বিভাগের মুখ্য ছিলেন। তার অধীনস্থ ছিল কার্তিক একে অররা বলা হত। তিনি শুধু লেখালেখির কাজ করতেন। বাইতুলিক মতে আরেকটি পদ ছিল বই বাধানো কর্মী।
ছয়জন বায়তুল হিকমার প্রধান বাস সাহেবু বায়তুল হিকমা হলেন
১) আবু সাল বিন নৌবাখত - হারুন রশিদের সময় ।
২) সালমুন-মামুনের সময়।
৩) সাহাল বিন হারুন - হারুন ও মামুনের সময়।
৪) হাসান বিন মিরার - মামুনের সময়।
৫) আহমদ ইবনু মোহাম্মদ
৬) মানি বিন মাজিদ
দুইজন বিখ্যাত আমিরুত তরজমা হলেন
১) হুনাইন বিন ইসহাক
২) ইউহান্না বিন মাসাবীহ ।
আমিরুত তরজমার অধীনস্থ অনুবাকদের দল কাজ করতো, আমিরুত তরজমা নিজেও অনুবাদের কাজ করতেন। তিনি ভিন্ন ভিন্ন অনুবাদকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বই নির্ধারণ করতেন। অনুবাদের পর অনুবাদিত বইয়ের গুণগত মান যাচাই করতেন।
হুনাইন বিন ইসহাক নিজে যে দলটিতে কাজ করতেন ওই দলের মধ্যে দক্ষ অনুবাদক হলেন
১) হুবাইস।
২) ইয়াহিয়া বিন হারুন।
৩) ইস্তেফান বিন হাকিম।
৪) মুসা বিন আবু খালিদ।
বায়তুল হিকমাতে মূলত চারটি ভাষা থেকে আর্মিতে অনুবাদ হত।
১) গ্রীক ভাষা
২) সুরিয়ানী ভাষা
৩) পারসিয়ান ভাষা
৪) সংস্কৃত ভাষা
বাইতুল হিকমার গুরুত্বপূর্ণ অনুবাদক
*গ্রীক ভাষা থেকে আরবিতে যারা অনুরোধ করেন তাদের মধ্যে ফুনাইন বিন ইসহাক চিকিৎসা বিজ্ঞানে গ্রিক চিকিৎসক জালিনুস এর বই অনুবাদ করেছিলেন।
হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বিন মাতার উকলিদিসের বই অনুবাদ করেন। কুস্তা বিন লুকা বায়ালা বাক্বি প্লুটো ও অ্যারিস্টোটল এর বই অনুবাদ করেন।
*সুরিয়ানী ভাষা থেকে আরবিতে যারা অনুবাদ করেন তাদের মধ্যে হুবাইশ বিন আইসান আসান। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপরে গ্রিক বইয়ের অনুবাদ করেন। ইসহাক বিন হুনাইল অ্যারিস্টটলের দর্শনের বই ও গণিত শাস্ত্রের বইয়ের অনুবাদ করেন।
*পারসিয়ান খাসা থেকে আরবি ভাষাতে যারা অনুবাদ করেছিলেন তাদের মধ্যে আবু সহাল নৌবাখত, সালমুন ,ওমর ইবনে ফারুখান , আব্দুল্লাহ বিন আলি প্রসিদ্ধ ছিল। আব্দুল্লাহ বিন আলি ভারতীয় পন্ডিত চারক এর বই অনুবাদ করেন। এটি আরবির আগে সংস্কৃত ভাষা থেকে পারসিয়ান ভাষা তে অনুবাদ হয়।
*সংস্কৃত ভাষা থেকে আরবিতে যারা অনুবাদ করেন তাদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন - মানকা হিন্দ , ইবনে দুহন হিন্দ
বাইতুল হিকমার বিখ্যাত লেখক –
বাইতুল হিকমার বিখ্যাত লেখক গন হলেন
১) আবু জাফর মুহাম্মদ বিন মুসা খাওয়রিজমী( ২৩২হি./৮৪৭খ্রি.) বাইতুল হিকমাতের স্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। তিনি জ্যোর্তি বিদ্যা ও গনিত শাস্ত্রে দক্ষ ছিলেন। তিনি গনিত শাখা আল জ্যাবরা ,জ্যামেতি, পাটিগণিত এ দক্ষ ছিলেন। ভূগোলের উপরে তিনি বই লিখেছিলেন জ্যোতির্বাদে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান কিতাবুল সিন্দ হিন্দ, এটি হাজারীর বই কিতাবুল সিন্দ হিন্দ কবিরে সারসংক্ষেপ। আলজেব্রার উপর তার বিশ্ব বিখ্যাত বই কিতাবুল যাবার আল মুকাবালা। পার্টি গণিতের উপর তিনি যে বই লিখেছিলেন তার পান্ডুরূপী পাওয়া যায়নি তবে সেটির গ্রিক ভাষায় অনুবাদিত পান্ডুলিপিটি পাওয়া যায়। কিতাবুল জামি ওয়া তাফরিক।
২) সাঈদ বিন হুরাইন -
সাঈদ বিন হুরাইন বাইতুল হিকমাতের সাহল বিন হারুনের অধিনে কাজ করতেন। তিনি বিজ্ঞ জ্ঞানী পন্ডিত ছিলেন। তার লেখা বই হলো কিতাবুল হিকমাহ ওয়া মুনাফিউ হা।
কোন মন্তব্য নেই: