বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার পায়রা বন্ধ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের এবং তার মাতার নাম রাহাতুল নেছা সাবেরা চৌধুরানী। রোকেয়ার পিতা আরবি ও ফারসি ভাষায় সুপন্ডিত ছিলেন তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিত জমিদার।
বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকিয়া ছিলেন বাংলার মুসলিম নারী সমাজের আলোকবর্তিকা বঙ্গ ভারতের মুসলিম সমাজ যখন অশিক্ষা ও কুসংস্কারের আঁধারে নিমজ্জিত অবরোধ ও অবজ্ঞায় এদেশের নারী সমাজ যখন জর্জরিত ঠিক সেই সময় বেগম রোকেয়া মত একজন মহীয়সী নারীর আবির্ভাব না ঘটলে এদেশের নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণ সম্ভবপর হতো কিনা সন্দেহ। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী।
বেগম রোকেয়া ১৮৯৮ সালে বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, জলপরি সমাজ সচেতন, কুসংস্কার মুক্ত এবং প্রগতিশীল দৃষ্টি ভঙ্গিসম্পন্ন। রোকেয়ার বিবাহিত জীবন অনেক সুখময় ছিল কারণ স্বামীর সাহচার্য্যে এসেই বেগম রোকেয়ার জ্ঞান চর্চার পরিধি বিস্তৃত হয়। স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতায় রোকেয়া দেশি-বিদেশি লেখকদের রচনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হন।
তার সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত ঘটে স্বামীর অনুপ্রেরণায়। কিন্তু স্বামীর সেই আশীর্বাদ বেশি দিন রোকেয়ার ভাগ্যে জোটে নি ১৯০৯ সালে তিনে মেয়ে স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন চিরদিনের জন্য হারিয়ে যান।
তারপর নিঃসঙ্গ রোকেয়া স্বামীর অনুপ্রেরণাকে বুকে ধারণ করে নিজেকে নারী শিক্ষা বিস্তার ও সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় সামির দেওয়া অর্থে পাঁচটি ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরে ১৯১৯ সালে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল স্থাপন করেন সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলার কারণে স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য হন পরে কলকাতায় এসে ১৯১১ সালের ১৫ মার্চ আবারও চালু করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল মাত্র ৮ জন ছাত্রী নিয়ে শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি মাত্র চার বছরের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১০০ জন এ পৌঁছতে সক্ষম হয়।
১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারী সংগঠন আঞ্জুমানে সাখাওয়াতিনে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালের কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। বেগম রোকেয়া ১৯১৯ সালের কলকাতায় মুসলিম মহিলা ট্রেনিং স্কুল স্থাপন করেন।
বেগম রোকেয়া স্বামীর হাত ধরেই সাহিত্য জগতে পা রাখেন তার সব লেখাতেই নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটেছে তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো sultan's dream। যা ১৯০৫ সালে মাদ্রাজের ইন্ডিয়ান লেডিস ম্যাগাজিন এ প্রকাশিত হয়। এটিকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়।
তিনি আরো অনেক পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন বাল্যবিবাহ ও বিরুদ্ধে তার লেখা ছিল সোচ্চার সমাজের নিচু তলার মানুষের জীবনের দুর্দশার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে তার বহু প্রবন্ধ ও নকশা জাতীয় রচনা।
রকিয়া অন্যান্যগ্রন্থ গুলি হল মতিচুর পদ্মরাগ অবরোধবাসিনী তে।
অবশেষে নারী জাগরনের অগ্রদূত এবং আলোর দিশারী মহীয়সী বেগম রোকেয়া মাত্র ৫২ বছর বয়সে ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে তিনি উত্তর কলকাতার সোদপুরে শায়িত আছেন।
- বেগম রোকেয়া প্রবন্ধ রচনা
- বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত গ্রন্থ কোনটি
- বেগম রোকেয়ার শিক্ষা জীবন
- বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান
- বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু সাল
- সমাজ সংস্কারে বেগম রোকেয়ার অবদান
- বেগম রোকেয়ার জীবনী
- বেগম রোকেয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনী
- বেগম রোকেয়ার কর্মজীবন
কোন মন্তব্য নেই: