খারিজি মতবাদ ~ ইসলাম পরিচয়

 খারিজি মতবাদ

খারেজীদের পরিচয়:-

মুসলিম দর্শনের ইতিহাসে খারিজীগণ একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত খালিজি অর্থ দলত্যাগী । খারিজি শীর্ষক গোষ্ঠীটি অন্যান্য মুসলিম গনের দল ত্যাগ করে একটি নতুন দল গঠন করায় তাদেরকে খারিজী নামে অভিহিত করা হয়। ইতিহাস খ্যাত সিফফিন  যুদ্ধে হযরত আলী রাঃ নিশ্চিত জয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হওয়ার পরেও মুয়াবি য়া রাজত্ব এর কৌশল এর কারণে জয় বঞ্চিত হন এবং প্রহসনের আলোচনায় আলী পরাজয় বরণ করেন এই প্রেক্ষাপটে হয়তো আলী এর ১২ হাজার অনুসারী তার দল ত্যাগ করে একটি নতুন ধর্মীয় রাজনৈতিক দল গড়ে তোলে । হযরত আলী এর নেতৃত্বাধীন মূল ধারার মুসলিম উম্মাহ থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠনের জন্যই দলটি খারিজি নামে ইতিহাস খ্যাত হয়।

খারিজিদের ধর্মীয় মতবাদঃ -

উগ্র ও বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে পারদর্শী খারেজিরা তাদের ধর্মীয় মতবাদে উগ্রতা ও নেতিবাচক চিন্তারই প্রতিফলন ঘটায় যেমন--

১) কবিরা গুনা:- অরিজিতের মতে কোন মুসলিম দাবিরা গুনা করার পর তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে সে অনন্তকাল জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে.২) সমকামিতার শাস্তি:-খারিজিরা সমকামিতার শাস্তি রোহিত করেন কারণ তাদের মতে সমকামিতার শাস্তির ব্যাপারে মহা গ্রন্থ আল কুরআনে কোন কিছু বর্ণিত হয়নি এবং সেজন্য পুরো নির্দেশও দান করা হয়নি। 

৩) হৃদয় বৃত্তিক সম্পর্কঃ- খারিজিরা প্রার্থীর জীবন সম্পর্কে অত্যন্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করত.। তারা হৃদয়বৃত্তিক দুর্বলতা প্রেম বা সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করত। এজন্য তারা কুরআন মজিদের সূরা ইউসুফকে অগ্রহণীয় মনে করত কারণ এতে হৃদয়বৃত্তিক দুর্বলতা ও প্রেমই প্রাধান্য পেয়েছে তারা একে পরবর্তীকালের সংযোজন বলে বিশ্বাস করতো। 

৪) ইসলাম চ্যুতি:- খারিজিরা বিশ্বাস করে একটি মাত্র অন্যায় কাজী মানুষকে ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত করে তাই কোন কোন মুসলিম কোনক্রমে কোনো অন্যায় কাজ করতে পারে না অন্যায় কাজ করে কেউ মুসলিম থাকতে পারে না ।

৫) মুসলিম খলিফা ও শাসক সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি:- খাদিজির কাফির কারণ তিনি আল্লাহর হুকুমের পরিবর্তে মানুষের বিচার মেনে নিয়েছেন তিনি শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেননি এবং 4000 স্বাভাবিকই হত্যা করেছেন। যারা সকলেই খালি ছিলেন হযরত আলী মত তার সন্তানগণ ও কাফের কারণ তারা অন্যায় যুদ্ধে তাদের পিতাকে সমর্থন দিয়েছিলেন ‌।
খারিজির মতে হযরত মুয়াবিয়া কাশির কারণ তিনি মুসলিম রক্তপাতই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন হযরত আমর ইবনুল আস ও আবু মুসা আজহারী ও কাফির কারণ তারা দামামাতুল জানদালের সালিশে মধ্যস্থতা করেন একইভাবে ব্রাজিল ও কাফির কারণ তিনি অন্যায় ভাবে মুসলিম বিশ্বের ক্ষমতা দখল করেন।

খারিজের উপদলসমূহ:-

খারিজিদের বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন মতবাদের জন্ম দেয় এবং সে মতবাদের ভিত্তিতে নানা অবদানে বিরক্ত হয়ে পড়ে যেমন--

 ক) আজারিকাঃ- খারেজীদের মধ্যে হাজারিকার সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গোরা এবং সংকীর্ণ মনা নাসিরুদ্দিন আজ রাত এ দলের প্রতিষ্ঠাতা তার নাম অনুসারে দলের নাম আধারিকা।
খ) নাজ দিয়া:- খারেজী সম্প্রদায়ের মূল মতবাদের সবচেয়ে নিকটবর্তী উপদল হলো নাজ দিয়া। নাজদা বিন আমার এই উপাদানের প্রতিষ্ঠাতা ধর্মীয় মতাদর্শে অবশ্য নাজদিয়ারা প্রায় আজাদী কাদের সমপর্যায়ে ভুক্ত।
গ) ইবাদিয়া:- খারিজি উপদল সমূহের মধ্যে ইবাদিয়ারা মধ্যমপন্থী হিসেবে খ্যাত। আব্দুল্লাহ ইবনে ইবাদ এই দলের প্রতিষ্ঠাতা। তারা খারিজি সম্প্রদায় বহির্ভূত মুসলিমদের কাফের মনে করে না এবং তাদেরকে হত্যা করা অবস্থায় বলে গণ্য করে না।      ঘ) স্বাভাবিক:- জেদ বিন আক্সার ছাবাবিয়া উপদলের প্রতিষ্ঠাতা তারা মনে করে যারা খারেজি নয়, তারা মুসলিম। রিয়াদের মতে মুসলিম দেশ সমূহ মূলত অমুসলিমদের লীলাভূমি। তারা কাবিরা গুনাহকে কুফরি মনে করে এবং কবীরা গুনাহ কাফির মনে করে।


বস্তুত রাজনৈতিক মতবাদে যেমন তেমন ধর্মীয় মতবাদের ও খারিজিরা অত্যন্ত অগ্রপন্থী এই কারণে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র মানুষের এসব প্রচেষ্টার পরও মুসলিম বিশ্বের কোথাও খারেজীদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি বা সাধারণ মানুষ তাদের কে গ্রহণ করেনি। তবে সমকালীন রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিপরীতে তাদের গণতান্ত্রিক চেতনা ও অধিক তো ইসলাম সমর্থিত হলেও উগ্রপন্থা ও চরম নীতির কারণে মানুষের কাছে তা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি তবুও এটি একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.