ক্যালিগ্রাফি ~ ইসলাম পরিচয়


 ক্যালিগ্রাফি

ভূমিকা:-

 
খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর ঘোড়ার দিকে ইসলাম ধর্মের অভ্যুদয়ের পর আরো উপদ্বীপে সীমানা পেরিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে আফ্রিকা হয়ে পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত। সুবিশাল মুসলিম সাম্রাজ্য জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প সাহিত্যে দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের জয়জয়কার। মধ্যযুগে কয়েক শতাব্দী ধরে ক্যালিগ্রাফি মুসলিম শিল্পকলার অন্যতম প্রধান শাখা হিসেবে গড়ে উঠেছিল।। বিশ্বব্যাপী শিল্পকলার ইতিহাসে মধ্যযুগের ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি আজও এক অনন্য ক্ষান দখল করে রেখেছে।
*নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সময়কালে:-
মহানবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ ওহী বা ঐশী বাণী লিখে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গৃহীত হয় ।এ ব্যাপারে সুন্দর হস্তলিপিকে উৎসাহিত করা হয়েছে। মরমী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর উপর অবতীর্ণ ওহি বা ঐশীর সমষ্টি হল কুরান। এই সময় সুন্দরভাবে হস্তাক্ষরের কোরআন লিখন ও সংরক্ষণ সৎকর্ম হিসেবে বিবেচিত হতো।  হুদায়  বিয়ার সন্ধির সময়ে হযরত আলী রাঃ এর উপর ন্যাস্ত ছিল সন্ধি লিখন। মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সময়কালের হস্তলিপি চরমভাবে উন্নতি লাভ করে। বিভিন্ন দেশ বিদেশে চিঠিপত্র করেন করা হতো হস্তলিপির লিখনে।

*খোলাফায়ে রাশেদীনদের সময়:-

হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর শাসন আমলে কুরআন একত্রিত করা হয়। তারপর হায়াত ওসমান রাদিয়াল্লাহু এর শাসনামলে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু এর একত্রিত কুরআনের পান্ডুলিপিটি থেকে অনেকগুলি নকল করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রেরণ করা হয়। ফলে পরোক্ষভাবে এই প্রক্রিয়া আরবি হস্তলিখন শিল্পের ধারাবাহিকতাকে বহন করে বা বিকশিত করতে যথেষ্ট অবদান রাখে। খলিফা হযরত ওমর রাঃ এর সময়কালেও হস্তলিপির উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।

*বিভিন্ন শাসন আমলে:-

বিভিন্ন শাসনামলে মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তরিত হয়েছে দামেস্ক, বাগদাদ, ইস্পাহান ইস্তাম্বুল সহ বিভিন্ন শহরে। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় শাসকগণের সচেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার ফলে এসব শহর পরিণত হয়েছিল জ্ঞান বিজ্ঞানে ও শিল্প সাহিত্যের এক একটি প্রাণকেন্দ্র ইসলামী লিপির কলার বিকাশ ও পরিবর্তন ঘটেছে বিভিন্ন শাসনামল ও রাজধানীকে কেন্দ্র করে উমাইয়া ও আব্বাসীয় শাসনামলে কুরআন ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে আরবি বর্ণমালার ব্যবহারের প্রয়োজনে নাখ মুস্তালিক তালিক মুহাক্কাক,রিকাহ, দিওয়ানি ইত্যাদি বিভিন্ন ধাঁচের হস্তলিপির উদ্ভব ঘটে। সর্বশেষ উসমানী শাসন আমলে ইসলামী লিপির চরম উন্নতি সাধন হয়।

*উপসংহার:-

মধ্যযুগের গৌরবময় মুসলিম সাম্রাজ্য গুলো আর নেই তবে বুদ্ধিবৃত্তিক সভ্যতার বহু কালজয়ী নিদর্শন আজও রয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী লিপি কলা বা ক্যালিগ্রাফি অন্যতম।

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.